একটি ঢিলা যোনি এবং তাকে আঁটসাঁট করার উপায়

যোনি কি?

যোনি হলো জড়ায়ু এবং ভালভার মধ্যবর্তী একটা টিউব। এটি একটি মহিলার শরীরের ‘ভিতরে’ থাকা জরায়ু এবং বাইরের বিশ্বের মধ্যে সংযোগ তৈরি করে। এই টিউবের মধ্য দিয়ে পিরিয়ডের রক্ত এবং গর্ভ থেকে বাচ্চা বেরিয়ে আসে। আবার এই টিউবের মধ্য দিয়েই সহবাসের সময় লিঙ্গ প্রবেশ করানো হয়।

ঢিলা/লুজ ভ্যাজাইনা

লুজ একটি আপেক্ষিক শব্দ। ‘লুজ’ যোনি বলে পৃথিবীতে কোন কিছু নেই। আপনার যৌন জীবন, গর্ভাবস্থার অবস্থা এবং বয়সের উপর নির্ভর করে আপনার যোনি কখনো ঢিলা হয় এবং কখনো বা টাইট হয়।

এটি একটি ইলাস্টিক ব্যান্ডের মতো যা শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী নিজেরাই ঢিলা করে এবং শক্ত করে। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ মনে করেন যে, অধিক মানুষের সাথে কিংবা অধিকবার যৌন মিলন করলে যোনি ঢিলা হয়ে যায়, যা আসলেও সত্য নয়। প্রকৃত সত্যটা হলো- সহবাসের পূর্বে এবং সহবাসের সময় উত্তেজনার কারনে যোনির চারপাশে বিদ্যমান পেলভিক টিস্যু নমনীয় হয় ও যোনিকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে খুলে দেয় এবং সহবাস শেষ হয়ে গেলে যোনির চারপাশের পেশীগুলি যোনিকে শক্ত করে সেখানে সংকুচিত হতে শুরু করে। বিষয়টা অনেকটাই মুখে হাই তোলার মতো।

তাহলে কি একটি টাইট যোনি থাকা ভালো?

হ্যাঁ, আমি এটা মেনে নিচ্ছে যে একজন বয়স্ক মহিলার তুলনায় অল্প বয়সি মেয়ের টাইট যোনি থাকে। কিন্তু এই আটশাট যোনি থাকা সবসময় ভাল লক্ষন না।

উদাহরণস্বরুপ, একজন মহিলা যখন যৌন মিলনের জন্য প্রস্তুত হন, কিংবা তিনি যখন উত্তেজিত হন। তখন সেই মহিলার যোনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চারপাশের পেশিগুলোকে আলগা করে ফেলে এবং নিজেকে লুব্রিকেন্ট করে ফেলে। লুব্রিকেন্ট মানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পিচ্ছিল করে ফেলে।

এখন মনে করেন কোন কারনে যদি টাইট যোনিটা ঢিলা না হয়, তাহলে কি হবে? স্বাভাবিকভাবেই ভিতরটা লুব্রিকেন্ট হবেনা, যার ফলে যৌন মিলন করাটা আপনার জন্য খুবই বেদনাদায়ক হয়ে উঠবে। কখনও কখনও এটি আপনার যৌন মিলনকে অসম্ভব করে তুলতে পারে। 

আর মেডিকেলের ভাষায় এটিকে একটি মারাত্মক রোগ হিসাবে বিবেচনা করা হয়, যার নাম ভ্যাজিনিসমাস (Vaginismus)। সবচাইতে মজার বিষয় হলো, গবেষণা বলছে প্রতি ৫০০ জনে ১ জন মহিলা এই রোগে আক্রান্ত। তাই এই ধরনের সমস্যা থাকলে আপনাকে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। 

তাহলে যোনি কেন ঢিলা হয়ে যায়?

আপনার যোনির স্থিতিস্থাপকতাকে প্রভাবিত করে এমন দুটি জিনিস রয়েছে যা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আর তা হলো-

  • আপনার বয়স এবং 
  • সন্তানের জন্ম।

শিশুর জন্ম এবং বয়সের কারণে যোনিপথ কিছুটা ঢিলা হয়ে যায়। আপনি যত বেশি যোনিপথে সন্তান জন্ম দিবেন, যোনি তত বেশি আলগা হতে থাকবে।

এবং আপনি যদি কোন সন্তান জন্ম নাও দেন, বয়স বাড়ার পাশাপাশি আপনার যোনি ঢিলা হতে শুরু করবে। বিশেষ করে যে মহিলাদের বয়স ৪০ এর কাছাকাছি বা ৪০ এর বেশি। তারা এই সমস্যায় পরতে পারেন। এর কারণ হলো, যখন কোন নারী মনোপজের কাছাকাছি পৌছে যান তখন তার শরীর থেকে ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা কমতে থাকে। তখন যোনি টিস্যু হয়ে যায়-

  • পাতলা
  • শুষ্ক 
  • কম অ্যাসিটিক এবং
  • কম নমনীয়। 

যোনি টাইট করার উপায়? বা কিভাবে আপনার যোনিকে শক্তিশালী করে তুলবেন?

অধিকাংশ গবেষণা এটাই বলে যে, আপনার পেলভিক ফ্লোর পেশী শক্তিশালী করার জন্য আপনাকে কেগেল (kegels) ব্যায়াম করতে হবে।(কেগেলে ব্যায়াম মানে যোনিকে শক্তিশালী করার ব্যায়াম)

কিভাবে কেগেল ব্যায়াম করতে হয়?

image from kgoal.com
  • প্রথমে আপনার মূত্রাশয় খালি করুন।
  • এরপর বসে,দাঁড়িয়ে কিংবা শুয়ে আপনার পেলভিসের পেশীগুলিকে ক্লেঞ্চ করুন। (অর্থাৎ আপনি প্রস্রাব ধরে রাখার চেষ্টা করছেন এমনভাবে যোনিকে ভিতরের দিকে টেনে ধরুন)
  • এভাবে তিন সেকেন্ডের জন্য ক্লেঞ্চ করুন এবং তিন সেকেন্ড পর ছেড়ে দিন।
  • প্রত্যেকবার ১০ বার করে ক্লেঞ্চ করুন, এবং দিনে তিনবেলা এ ব্যায়াম চালিয়ে যান।
Scroll to Top